প্রকাশ: ২০২২-০২-১৭ ১৬:৩৪:১২ || আপডেট: ২০২২-০২-১৭ ১৬:৩৪:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাঝে খুললেও খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলাধীন একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। দীর্ঘ ছুটির পর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে বিদ্যালয়ের এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। যে কোন সময় স্কুল ভবনের ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার বা সম্পূর্ণ ভবন ধসে পড়ে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে অভিভাবক, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জুরমরম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিগত-১৯৯৪ইং সালে একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্কুল ভবন নির্মাণের শুরুতেই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্ন মানের কাজ করার অভিযোগ করেও কোন ফল পায়নি। এদিকে বিকল্প কোন ভবন না থাকায় ওই ভবনে চলে আসছে পাঠদান। দীর্ঘদিন ওই ভবন সংস্কার না করায় বহু আগেই বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজ করে। এর মধ্যে করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গত ও চলতি বছরের অব্যাহত ভারী বর্ষণে বিদ্যালয় ভবনটি আরও নাজুক অবস্থায় পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ২৬ বছর আগে নির্মিত একতলা ভবনের বেহাল দশা। দেখা যায়- নাজুক ২ কক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ৩০/৩৫ শিক্ষার্থী ক্লাস করছে। সবার মধ্যেই এক ধরণের উৎকণ্ঠা। এরমধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে কোমলমতিদের মধ্যে উৎকণ্ঠা অরও বেড়ে যায়। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ায় বাহির থেকে বিভিন্ন স্থানের রড দেখা যাচ্ছে। ভবনের নাজুক দরজা, জানালার গ্রিলে মরিচা পড়ে রয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী দিতি ত্রিপুরা জানায়, দীর্ঘদিন পর ক্লাস খুললেও তাদের মাঝে আনন্দ নেই। কখন যেন ছাদ ভেঙ্গে মাথায় পড়ে সেই ভয়ে থাকি। ভবন ধসে পড়ার আতংকে ঠিকভাবে ক্লাসে মনযোগী হতে পারছে না তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুগম ত্রিপুরা বলেন- ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ১১৪জন শিক্ষার্থীর ক্লাস করার কথা স্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পরেই দেখি বিদ্যালয়ের অবস্থা নাজুক ও জরাজীর্ণ ছিল। আমি যথাসময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি অবহিত করি।
ঐ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র খাগড়াছড়ি জেলার বিশিষ্ঠ ঠিকাদার এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন- খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নাকের ডগায় এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কমলমতি শিশুরা পাঠদান করে আসছে। জেলায় এত উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু কারও যেন দায়ভার নেই। যদি ভবন ধসে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে এই দায়ভার কে নিবে। তিনি দ্রুত নতুন ভবন নির্মানের অনুরোধ জানান।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম জানান- বিদ্যালয়টির বিষয়ে খবর পাওয়ার পর পরিদর্শন করা হয়। এসময় তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মানের জন্য উর্ধতন কর্মকর্তা বরাবর পত্র দিয়েছি।
খাগড়াছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন জানান- বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ, নতুন ভবন বরাদ্দের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা করেন খুব তারাতারিই ভবন নির্মান করা হবে।