খাগড়াছড়ি, , মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রামগড়ে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ২০২৩-০৯-১২ ১৮:১৭:৩৬ || আপডেট: ২০২৩-০৯-১২ ১৮:২৯:০১

স্টাফ রিপোটার।।
শিক্ষা দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়ির রামগড়ে ছাত্র সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।

আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় রামগড় উপজেলা সদর এলাকায় পিসিপির রামগড় উপজেলা শাখার উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে বক্তারা নিজের সহপাঠী ছাত্রীদের মান-সম্ভ্রম রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার আহবান জানান।

‘সহপাঠী ছাত্রীদের মান-সম্ভ্রম রক্ষার্থে এক হও, লড়াই করো’ এই আহ্বানে অবিলম্বে কাপ্তাইয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী বোনের ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত ছাত্র সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি অসীম চাকমার সভাপতিত্বে ও তৈমাং ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি শান্ত চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি জার্মেন ত্রিপুরা। সমাবেশে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে ছাত্র নেতা শান্ত চাকমা শিক্ষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি শাসন, শোষণ ও শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ রুখে দাঁড়িয়েছিল। শরিফ শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলার মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারকে গণবিরোধী এ শিক্ষা নীতি বাতিল করতে বাধ্য করেছিল। শিক্ষার আন্দোলনে করতে গিয়ে ওয়াজিউল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, বাবুলসহ নাম না-জানা অনেকে সেদিন শহীদ হয়েছিলেন।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজ, রাস্তায় কোথাও নিরপত্তা নেই। নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রাঙামাটি কাপ্তাইয়ে নিজ বাড়িতে গণধঘর্ষণের শিকার হয়েছিল ১০ম শ্রেণী পড়ুয়া এক ছাত্রী। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে পাহাড়ে ছাত্র সমাজকে ঐকবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। ধর্ষক, নিপীড়কদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম করতে হবে।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষা ব্যবস্থা বেহাল অবস্থায় রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের চরম শিক্ষক সংকট, দুর্গম এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংকট, স্কুল-কলেজে ছাত্রাবাস নেই। পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি বিরাজমান রয়েছে। এ সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়ার হার দিন দিন বাড়ছে। এছাড়াও পাহাড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে শিক্ষার্থীদের ওপর কড়া সেনা-গোয়েন্দা নজরদারী জারি রাখা হয়েছে। পাহাড়ি ছাত্র সমাজকে শিক্ষার ন্যায্য অধিকার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামে এগিয়ে আসতে হবে।

সমাবেশ থেকে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন বন্ধ করা, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংকট নিরসন এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের শিক্ষক নিয়োগের ঘুষ বাণিজ্যে বন্ধ করে যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে রামগড়-খাগড়াছড়ি প্রধান সড়কে একটি মিছিল বের করা হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.