প্রকাশ: ২০২৩-০৮-১৮ ১৬:১৬:৪৭ || আপডেট: ২০২৩-০৮-১৮ ১৬:১৬:৫২
মোঃ আরিফুর রহমান, রাঙ্গামাটি।।
হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষে দীর্ঘ চার মাসেরও বেশী সময় বন্ধ থাকার পর অবশেষে ১সেপ্টেম্বর মধ্যেরাত থেকে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদকাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন,রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
জানা যায়, হ্রদে পানিস্বল্পতার কারণে ২০ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে তিন মাসের নির্ধারিত সময়ের পর গত ১৯ জুলাই থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত আরও একমাস মাছ ধরা বন্ধের সময়সীমা বর্ধিত করেছিল জেলা প্রশাসন। তবে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে মাছের সুষম বৃদ্ধির জন্য ২০আগস্ট থেকে ৩১আগস্ট পর্যন্ত আরও ১২ দিন বন্ধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মোঃ আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙ্গামাটি নদীউপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লিপন মিয়া, মৎস্য ব্যবসায়ী উদয়ন বড়য়া, মোঃ আব্দুল শুক্কুরসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়েছেন, সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টিতে কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি বাড়লেও হ্রদে মাছের সুষম বৃদ্ধি হয়নি। যে কারণে বর্ধিত একমাসের মধ্যে আহরণ শুরু হলে হ্রদে কার্পজাতীয় মাছ ছোট অবস্থাতেই ধরা পড়ে যাবে। যে কারণে আরও কিছুদিন মাছ আহরণ বন্ধের দাবি জানান তারা। পরবর্তীতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত আসে আরও ১২দিন সময় বর্ধিত করে ১ সেপ্টেম্বর থেকে মাছ আহরণের।
বিএফডিসি’র তথ্য মতে, ২০২৩ সালে হ্রদ বন্ধকালীন সময়ে ৭২৬ অভিযান পরিচালনা করে ১ লাখ ৫ হাজার মিটার জাল, ২৬টি বোট ও ৩ হাজার ৪৭৩ কেজি মাছ জব্দ করা হয়।কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মোঃ আশরাফুল আলম ভূঁইয়া জানিয়েছেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু সংক্রান্ত বৈঠকে আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে মাছ আহরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন হ্রদে এখন পর্যাপ্ত পানি বাড়লেও অনেক মাছ এখনও ছোট রয়েছে, সঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারেনি। তাই মাছের সুষম বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও কিছুদিন মাছ ধরা বন্ধ রাখা প্রয়োজন। পরে বৈঠকে ২০ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আরো ১২দিন সময় বর্ধিত করে আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর ভোর থেকে মাছ আহরণ শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়লেও মাছ আশানুরূপ বাড়েনি। তাই হ্রদে এখন জাল ফেললে পোনামাছ ধরা পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। তাই হ্রদে মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও ১২ দিন বাড়ানো হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত থেকে জেলেরা কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নামতে পারবেন।