খাগড়াছড়ি, , মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব… বাসন্তী চাকমা এমপি

প্রকাশ: ২০২২-০৮-০৯ ০৭:৩৯:৫০ || আপডেট: ২০২২-০৮-০৯ ০৭:৩৯:৫৪

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, খাগড়াছড়ি: “মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা, অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা”প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৯নং সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সদস্য বাসন্তী চাকমা এমপি’র নিজস্ব উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, ইতিহাসের সাহসী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মোনাজাত ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৮আগস্ট)বিকাল সাড়ে ৪টায় জেলা শহরের মহাজন পাড়াস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বঙ্গমাতা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মোনাজাত ও দোয়া মাহফিলের পরপরে ৯২তম জন্মদিনের কেক কাটা হয়। পরে জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শতাধিক এতিম শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ ও প্রায় ১’শ ৫০জন অসহায়,দুস্থদের ও অস্বচ্ছল পরিবারের মাঝে উন্নতমানের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

এ সময় সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা এমপি বলেন, মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এই মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তার শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা লাভ করে। বাঙালি জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর এই আজীবন লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী ছিলেন তার সহধর্মিনী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি তিনি বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি একজন মহীয়সী নারী।এ দেশের রাজনীতিতে তাঁর অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফূরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন।

এ সময় জাতীয় মহিলা সংস্থা’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার চেয়ারম্যান নিগার সুলতানাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত:১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক এবং মাতার নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সন্তান শেখ মুজিব দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় শুধুমাত্র বাঙালি জাতির পিতাই হয়ে ওঠেননি, বিশ্ব বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন। তার পেছনে থেকে সব ধরনের সাহস যুগিয়েছেন, সহযোগিতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তার সহধর্মিনী, এই মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী হিসেবে দীর্ঘকাল তার পাশে থেকে মানবকল্যাণ ও রাজনীতির যে শিক্ষা তিনি লাভ করেছেন, তাতে তিনি একজন বিদুষী ও প্রজ্ঞাবান মানুষে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বার বার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি ছিলেন তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে ছুটে আসতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ভেঙে না পড়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দৃঢ়তার সঙ্গে। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী মহল স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে কাজ করেছেন, গরিব-এতিম-অসহায় মানুষদের সাহায্য করেছেন, বীরাঙ্গনাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার মতো মহৎ দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মহীয়সী নারী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সপরিবারে স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ঘাতকচক্রের বুলেটের আঘাতে নির্মমভাবে শহীদ হন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.